এম. বশির উল্লাহ, মহেশখালী:
মহেশখালীতে দুদকের গণশুনানীতে চরম অভিযোগ ওঠার পর দ্রুত বদলী করার সিদ্ধান্ত হলেও কোনো এক অজানা কারণে এখনও বহাল তবিয়তে আছে মহেশখালী হিসাবরক্ষণ অফিসের বহুল আলোচিত মধু সরকার। শুনানীতে দুর্নীতির সাক্ষত প্রমাণ পাওয়ার পরেও কেনো তাকে মহেশখালী থেকে অন্যত্র বদলী করা হয়নি তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। এই মধু সরকার ও অফিসটির পদস্থ কর্মকর্তার সিমাহীন দুর্নীতির হাতে অসহায় হয়ে আছে মহেশখালীতে কর্মরত খোদ সরকারি চাকরিজীবীরা। আবার কিছু কিছু অফিসারের সাথে তার গোপন সখ্যতা থাকায় দিনের পর দিন তার দুর্নীতির মাত্রা বেড়ে চলেছে বলে অনেকের অভিমত। এমন পটভূমিতে তার দূর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছেন উপজেলা প্রশাসন। ভুক্তভোগীদের কাছে তার ব্যপারে তথ্য চেয়েছেন প্রশাসন। দ্রুত এই অফিসের দুর্নীতি ও হয়রাণী বন্ধ না হলে প্রতিবাদ স্বরূপ সরকারি কর্মকর্তারা কর্মবিরুতির মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলেও ইঙ্গিত পাওয়াগেছে।
একাধিক সূত্রের অভিযোগ থেকে জানা গেছে -কর্মরত সরকারি চকরিজীবী ও অবসর প্রাপ্ত চাকরীবীদের বেতন ভাতা তুলতে হয় মহেশখালী হিসাবরক্ষণ অফিসের মাধ্যমেই। আর এই সুযোগটিই সব সময় অনৈতিক ভাবে কাজে লাগায় অফিসটি। বেতন ভাতার বিল ছাড় করার জন্য এমন কোনো হয়রাণী বাকি নাই -যা এই অফিসে এসে সংশ্লিষ্টদের হতে হয় না। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অবসর প্রাপ্ত শিক্ষদের স্ত্রী বা পরিবারের সদস্য, অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী সকলই কোনোনাকোনো ভাবে এই অফিসে এসে হয়রাণীর শিকার হয়েছে। মূলতঃ উৎকোচ তথা ঘুষের দাবীতে এই হয়রাণীর কাজটি করে থাকেন অফিসটির বর্তমান জুনিয়র অডিটর মধু সরকার। স্থানীয় বাসিন্দা ও দীর্ঘদিন থেকে একই অফিসে চাকরি করার সুবাদে এবং দুর্নীতি নিষ্কণ্টক করবার খাতিরে বিভিন্ন ‘লাইনঘাট’ মেন্টেইন করে চলার সুবাদে কোনো ভাবে থামছে না মধু সরকার।
সূত্রের তথ্য বলছে- এক সময় মধু সরকার অফিসটির এমএলএসএস হিসেবে কাজ করলেও বর্তমানে প্রমোশন পেয়ে জুনিয়র অডিটর হয়েছেন। পূর্বে তার অভাব অনটনের দিন গেলেও এখন বদলে গেছে তার নিত্য দিনের লাইফ স্টাইল। জ্যামিতক হারে বেড়ে চলছে অর্থ-সম্পদ। বদলে যাচ্ছে বাড়িও। তবে তাঁর এই অসম উন্নতিতে কারও মাথা ব্যথা নেই। তবে বিপত্তি যেনো অন্য জায়গায়। যে স্বামী হারা সর্বজন শ্রদ্ধেয় মরহুম শিক্ষকের বৃদ্ধ স্ত্রী বা তার গরিব সন্তান মরহুম শিক্ষকের প্রেশসনের সমান্য টাকা উঠাতে এসে হিসাবরক্ষণ অফিসে ঠকে নিদৃষ্ট অংকের বাধ্যতামূলক ঘুষ কমিশন দিতে হচ্ছে তাতে। এমন টাকায় কারো আঙ্গুল ফুলে উঠলে সাধারণ মানুষ বিষয়টিকে ঠিক যেনো সাধারণ ভাবে নেয় না। -অফিসটির ব্যপারে এমন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই।
শুধু মধু সরকারই নয়, অফিসটির কর্মকর্তা সুগত সেবক বড়ুয়ার বিরুদ্ধেও অনুরূপ অভিযোগ পাওয়াগেছে বহুদিক সূত্র থেকে। মূলতঃ তিনিই এই জুনিয়র অডিটরকে দিয়ে এমনসব কাজ করাচ্ছেন। তিনি একমাত্র ঘুষের স্বার্থে একই কম্পাউন্ডে চাকরি করা অন্য কলিগদের বিষয়েও চোখউল্টাতে দ্বিধা করেন না -অভিযোগ মহেশখালীর একাধিক সরকারি কর্মকর্তার। কর্মকর্তারা জানাচ্ছে তিনি কাজের চেয়ে যেনো ভাগভাটোয়ারাই অধিকতর বিশ্বাসী। তবে দৃশ্যতঃ যতো দোষ মধু সরকারেরই -হিসাবে দেখাযায়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মধু সরকার জানান -এটা অফিসারদের ব্যাপার, আমি তো ক্ষুদ্র মানুষ। এসবে আমাকে জড়ানো মানেই দুর্বলের উপর হয়রাণী করার সামিল।
তিনি বলেন, উপজেলার বিভিন্ন অফিস থেকে কিছু বিল দেওয়া হয়েছে, যা যথাযত পক্রিয়া মেনে জমা দেওয়া হয়নি। ফলে এগুলো ছাড়া যাচ্ছে না। তাছাড়া তিনি এসব ফাইলে স্বক্ষরের মালিক নন বলে দাবী করে বলেন -এটা যেনো তার উপরে বাড়তি হয়রাণী করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত: